পরীক্ষা ছাড়া এইচএসসির ফল প্রকাশে তিনটি বিল সংসদে
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় বিকল্প মূল্যায়নের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য আইন সংশোধনের প্রস্তাব উঠেছে সংসদে। এই পরীক্ষার ফল ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে আছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল আমাদের প্রস্তুত রয়েছে। বিলটি পাস হলেই ফল প্রকাশ করা হবে। আজ জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ ’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন।
করোনাকাল হওয়ায় পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সংসদে উপরোক্ত বিল উত্থাপন করা হয়েছে। এসব বিল দ্রুত পাস করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। দ্রুত ফলাফলের জন্য বিলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে অল্প সময় দিয়ে পাঠানো হয়েছে।
পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি দুইদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
সংশোধনীগুলো পাস হলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়া ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল ঘোষণা এবং পাসের সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি কোনো বাধা থাকবে না।
১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিমারি, মহামারি, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশনা জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।’
ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ উত্থাপন নিয়ে সংসদে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সাংসদ ফখরুল ইমাম। নিয়ম অনুযায়ী সংসদে উত্থাপনের আগে নোটিশ না পাওয়ায় তিনি এই আপত্তি জানান। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য নিয়েও আপত্তি জানান তিনি। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তাঁর অনুমোদন নিয়ে বিলটি তোলা হয়েছে বলে জানান।