ফুটবল বিশ্বকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনা । গত ২০ নভেম্বর হার্ট অ্যাটাকে মারা যান তিনি। তবে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ আর মৃত্যু নিয়ে রহস্য চলছেই। এবার তাকে নিয়ে বিস্ফোরক এক তথ্য দিলেন ৮৬’র বিশ্বকাপজয়ী এই তারকার একসময়ের ব্যক্তিগত চিকিৎসক আলফ্রেদো কাহে।
১৯৭৭ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলারের চিকিৎসক ছিলেন আলফ্রেডো। এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, ‘দিয়েগোর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু এক ধরনের আত্মহত্যা ছিল। মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর থেকে দিয়েগো মানসিক অবসাদে ভুগছিল। সে নাকি ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করতো না। ওষুধ খেতে চাইত না। ঘরবন্দি হয়ে থাকত। কারও সঙ্গে দেখা করত না। দিয়েগোর মৃত্যুর কয়েকদিন আগেই ওর সাবেক বান্ধবী ভেরোনিকার সঙ্গে কথা হয়েছিল। শুনলাম দিয়েগো নাকি ভেরোনিকাকে বারবার বলত সে আর বাঁচতে চায় না। আমার কাছে দিয়েগোর মৃত্যু তাই আত্মহত্যাই।’
মৃত্যুর পর প্রায় একমাস হতে চললো দিয়েগো ম্যারাডোনার। কিন্তু এখনও তার মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক শেষ হয়নি। বরং, ফুটবল রাজপুত্রের মৃত্যু নিয়ে নতুন তত্ব হাজির করেছেন তার এক চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকের মতে ম্যারাডোনার মৃত্যু বরণ করেননি, বরং তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
মাদকাসক্তির কারণে ম্যারাডোনা যখন জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে, যখন মরণাপন্ন এই ফুটবল গ্রেটকে চিকিৎসা দিতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন আর্জেন্টাইন চিকিৎসকরা, তখন কিউবা তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তৎকালীন কিউবান প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোর আমন্ত্রণে ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেশটিতে পুনর্বাসনে ছিলেন ম্যারাডোনা। এখানেই থেমে থাকেননি আলফ্রেডো। পুরো বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়ে তিনি জানালেন, ২০০৭ সালেও নাকি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন ফুটবল কিংবদন্তি। আলফ্রেডো বললেন, ‘২০০৭ সালে কিউবার রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে ইচ্ছাকৃত চলন্ত বাসে ধাক্কা মেরেছিল দিয়েগো। বড়সড় দুর্ঘটনা হয়নি। পরে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলে? জবাবে সে আমায় বলেছিল, হ্যাঁ আজ পারলাম না, তবে ভবিষ্যতে আবার চেষ্টা করব।’
তবে এতকিছুর পরও ম্যারাডোনার মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না আলফ্রেডো। হাসপাতালে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগও তোলেন তিনি। এছাড়া চিকিৎসক লিওপোল্ডো লুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। এ সম্পর্কে আলফ্রেডো বলেন, কোনো সন্দেহ নেই দিয়েগোর চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল। মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর তাকে কেন বাড়িতে পাঠানো হলো এ নিয়েও অভিযোগ তোলেন ম্যারাডোনার সাবেক এই চিকিৎসক। এদিকে, ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর তার চিকিৎসক লিওপোল্ডোর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ তুলেছিল ম্যারাডোনার পরিবারও।