নেইমার রাজার বেশেই মাঠে ফিরলেন! গোল করেই দুয়োর ‘জবাব’ দিলেন
ক্লাব ছেড়ে বার্সেলোনায় যাওয়ার গুঞ্জন চলমান থাকায়, নেইমারকে প্রথম চার ম্যাচের দলেই রাখেননি প্যারিস সেইন্ট জার্মেই কোচ থমাস টুখেল। তবে দলের পঞ্চম ম্যাচে প্রথমবারের মতো নেমে রাজার মতোই মাঠ ছেড়েছেন নেইমার। এই মৌসুমে প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছিলেন নেইমার, গতকাল। বার্সেলোনায় প্রত্যাশিত দলবদল হয়নি, তাই ভগ্ন মনোরথে পিএসজিতেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। পিএসজির ক্ষিপ্ত দর্শকরাও ছেড়ে কথা কননি। নিজেদের সেরা তারকাটাকে দুয়ো দিয়েছে পুরোটা ম্যাচে। নেইমার সব শুনেছেন চুপচাপ। আর ম্যাচের একদম শেষ দিকে জবাব দিয়েছেন সেসব ‘লাঞ্ছনা’র। তবে মুখে নয়, পায়ে। দুর্দান্ত এক গোল করে পিএসজিকে জিতিয়ে তবেই নিজেদের সমর্থকদের চুপ করেছেন এই ব্রাজিল তারকা।
শনিবার রাতে ঘরের মাঠে স্ট্রাসবার্গের বিপক্ষে জয় পেতে ঘাম ছুটেছে পিএসজির। তবে তাদের উদ্ধারকর্তা হয়েছেন নেইমার। ম্যাচ শেষের একদম আগমুহূর্তে গিয়ে গোল করে দলকে পাইয়ে দিয়েছেন ১-০ গোলের জয়। সারা ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেও গোলের দেখা পাচ্ছিলো না পিএসজি। যে কারণে ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় তাদের।
ম্যাচের তখন ৯৩ মিনিট। এই মৌসুমেই বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে পিএসজিতে আসা ফরাসি ডিফেন্ডার আবদু দিয়ালো বাম প্রান্ত থেকে একটা মাপা ক্রস ডি-বক্সে পাঠালেন। সেখানে পাকা শিকারির মতো অপেক্ষা করছিলেন নেইমার। মুহূর্তের মধ্যে দুয়ো দিতে থাকা পিএসজির দর্শকেরা দেখলেন ম্যাজিক। আধা সেকেন্ডের ব্যবধানে নিজের শরীরটা চূড়ান্ত দক্ষতায় উল্টো করে বাতাসে ভাসিয়ে দিলেন নেইমার। বাইসাইকেল কিক! আর তাতেই লেখা হয়ে গেল ম্যাচের ভবিতব্য। স্ট্রাসবুর্গকে একদম শেষ মিনিটের গোলে হারাল পিএসজি।
এদিকে মাঠে ফিরলেও, আবার বাইরে বসতে হবে নেইমারকে। আগামী বুধবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলতে নামবে পিএসজি। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে সে ম্যাচটি খেলতে পারবেন না নেইমার। তিন ম্যাচের শাস্তি থাকায়, চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির পরের দুই ম্যাচেও খেলা হবে না নেইমারের। অথচ গোটা ম্যাচ এই নেইমারকেই কী দুয়োটাই না দিলেন পিএসজির সমর্থকেরা! প্রকাশের অযোগ্য ভাষায় গালাগালি লিখে এনেছিলেন ব্যানারে করে। ম্যাচে যখনই নেইমারের পায়ে বল যাচ্ছিল, দর্শকেরা দুয়ো দিয়েছেন, চিৎকার করে গালি দিয়েছেন। নেইমারও মেনে নিয়েছেন নতমুখে। তা ছাড়া তাঁর আর কী-ই বা করার ছিল! দলবদলের গোটা সময়ে তাঁকে নিয়ে যা হয়েছে, নেইমার হয়তো প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন, ভেবেই রেখেছিলেন এমন কিছু একটা হবে!
ম্যাচের শেষে নেইমারের কণ্ঠে সেটাই শোনা গেল, ‘আমার মন অনেক খারাপ। আমি বুঝে গিয়েছি, এখন থেকে প্রতিটি ম্যাচ আমাকে অ্যাওয়ে ম্যাচ (প্রতিপক্ষের মাঠে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সমর্থনহীন অবস্থায়) ভেবেই খেলতে হবে!’