গত মৌসুমে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় কে ছিলেন? সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন তিনজন। লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও ভার্জিল ফন ডাইক। বিশ্বের সব জাতীয় ফুটবল দলের কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচিত সাংবাদিক ও সমর্থকদের চোখে এ মৌসুমে সবার সেরা ছিলেন লিওনেল মেসি । ২০১৫ সালের পর আবারও ফিফার দ্য বেস্ট হলেন মেসি। এক কথায় প্রথাই ভঙ্গ করলো যেন ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফা। বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কারের ক্ষেত্রে এতদিন এক অঘোষিত নিয়মই যেন পালন করে আসছিল তারা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলের কোনো সেরা পারফরমারের হাতেই যেন পুরস্কারটা তুলে দিতে পারলে ধন্য হয় ফিফা। শুধু তাই নয়, ইউরোপিয়ান বর্ষসেরা পুরস্কার যার হাতে ওঠে, ধরে নেয়াই হয় ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কারও জিততে যাচ্ছেন তিনি।
মাত্র কিছুদিন আগেই মোনাকোয় এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ইউরোপিয়ান বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার তুলে দেয়া হয় লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার ভিরগিল ফন ডিকের হাতে। সেখানে সংক্ষিপ্ত তিনজনের তালিকায় ছিলেন মেসি এবং রোনালদোও। লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান ছিল ডাচ ডিফেন্ডার ভিরগিল ফন ডিকের। গত দুই বছরও পুরস্কারের খাতায় নাম উঠেছিল মেসির। কিন্তু দু’বারই তিনি হলেন দ্বিতীয়। অবশেষে আবারও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ফিরে ফেলেন তিনি। এ নিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মতো ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জিতলেন তিনি (এর মধ্যে কয়েকবছর ফিফা বর্ষসেরা পরিচিতি ছিল ফিফা ব্যালন ডি’অর নামে)। এর আগে ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২ এবং ২০১৫ সালে ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার জেতেন মেসি।
৩২ বছর বয়সী মেসি গত ৫ মৌসুমে বার্সেলোনাকে ৪র্থ লা লিগা শিরোপা জিততে নেতৃত্ব দেন। ৩৫ লিগ ম্যাচে গোল করেছেন মোট ৩৬টি। অ্যাসিস্ট করেছেন ১১টিতে। সব মিলিয়ে পুরো মৌসুমে ৫১টি গোল করেছেন তিনি। অ্যাসিস্ট করেছেন ২২টি। গত বছর ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার ওঠার দারুণ সম্ভাবনা ছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হাতে। কিন্তু মেসি-রোনালদোকে পেছনে ফেলে পুরস্কারটা জিতলেন রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মদ্রিচ। ধরেই নেয়া হয় যে, রোনালদো রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে চলে যাওয়ার কারণে পুরস্কারটাও হারান। তাকে ইউরোপিয়ান বর্ষসেরা কিংবা ব্যালন ডি’অরের জন্যও সেরা মনোনীনত করা হয়নি।
ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কারে ফাইনাল ভোটাভুটিতে মেসি পেয়েছেন ৪৬ পয়েন্ট। ডাচ ডিফেন্ডার ভিরগিল ফন ডিক পেয়েছেন ৩৮ পয়েন্ট এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো পেয়েছেন ৩৬ পয়েন্ট। এরপরে সেরা ১০ ফুটবলারের মধ্যে রয়েছেন লিভারপুলের স্ট্রাইকার মোহামেদ সালাহ (২৬ পয়েন্ট), সাদিও মানে (২৩ পয়েন্ট), পিএসজি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে (১৭ পয়েন্ট), আয়াক্স মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্কি ডি জয় (১৬ পয়েন্ট), চেলসির সাবেক মিডফিল্ডার, বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদের ইডেন হ্যাজার্ড (১৬ পয়েন্ট), আয়াক্সের সাবেক ডিফেন্ডার ম্যাথিস ডি লাইট (৯ পয়েন্ট) এবং টটেনহ্যামের স্ট্রাইকার হ্যারি কেন (৫ পয়েন্ট)।