ক্লাবের হয়ে অনেক গোল ও অনেক ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব থাকলেও দেশকে এখনো কোনো ট্রফি এনে দিতে পারেননি এ সময়ের ফুটবলের সবচেয়ে বড় এই তারকা। জাতীয় দলের জার্সিতে লিওনেল মেসি নিষ্প্রভ- এমন অভিযোগ পুরনো। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে মেসি ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়ে ষোলআনা পুরণ করেছেন। এবারের কোপায় মেসি করেছেন মাত্র একটি গোল। তাও প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে পেনাল্টি থেকে। বার্সেলোনাকে অনেক ম্যাচ জেতানো মেসি দেশের গুরুত্বপূর্ণ দিনে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারলেন না। বিশেষ করে আর্জেন্টিনার বাঁচা-মরার ম্যাচে।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ১৩৫ ম্যাচ খেলে ৬৮টি গোল করেছেন মেসি। আর বার্সেলোনার জার্সিতে ৪৫২ ম্যাচে করেছে ৪১৯ গোল।জাতীয় দলের জার্সিতে নকআউট পর্বের ম্যাচগুলোতে তার অবদান খুবই কম। এ পর্যন্ত মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে ২০টি নকআউট পর্বের ম্যাচ খেলেছেন। যে ম্যাচগুলোতে হারলেই বিদায়। সে রকম ২০ ম্যাচ খেলে মেসি গোল করেছেন মাত্র ৪টি। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ৯টি বড় প্রতিযোগিতায় খেলেছেন মেসি; কিন্তু কোনো ট্রফি এনে দিতে পারেননি। নকআউট পর্বে যে চারটি গোল করেছেন মেসি তার সবগুলোই এসেছে ২০০৭ ও ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকায়।
২০০৭ সালে কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে পেরুর বিরুদ্ধে ৪-০ গোলের জয়ের একটি, সেমিফাইালে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ৩-০ গোলের জয়ে একটি এবং ২০১৬ সালের কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ৪-১ গোলের জয়ে একটি এবং সেমিফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৪-০ গোলের জয়ে একটি।
২০০৬ সাল থেকে মোট ৪টা বিশ্বকাপ খেলেছেন মেসি। এর মধ্যে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে খেলেছেন ফাইনালেও। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, মেসি কোনো বিশ্বকাপেরই নকআউটে গোল করতে পারেননি। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে যদি গোল করতে পারতেন, তাহলে বিশ্বকাপটা অন্তত জিততে পারতো আর্জেন্টিনা।
২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা খেলেছিল ফাইনালে। মেসি করেছিলেন ৪ গোল। কিন্তু তার কোনোটাই নকআউট পর্বে নয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে ডি মারিয়ার গোলে সুইজারল্যান্ডকে, কোয়ার্টার ফাইনালে হিগুয়াইনের গোলে বেলজিয়ামকে, সেমিফাইনালে গোলশূন্য ড্র’য়ের পর টাইব্রেকারে নেদারল্যান্ডসে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। সেখানেও কোনো গোল করতে পারেননি মেসি।
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে মাত্র একটি গোল করেছিলেন মেসি। সেটা নাইজেরিয়ার বিপক্ষে। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে তো ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো তার দলকে।